May 17, 2024, 5:37 pm

যশোরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পেঁয়াজের আবাদ

সুলতান মাহমুদ ॥
চলতি রবি মৌসুমে যশোর কৃষি জোনের আওতাধীন ৬ জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯০২ হেক্টর বেশি জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। আবাদ হওয়া জমিতে পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা। যশোর কৃষি জোনের আওতায় জেলাগুলো হচ্ছে ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও যশোর।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অফিস জানায়, চলতি রবি (২০২৩-২০২৪) মৌসুমে ৬ জেলায় মোট ৩৮হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৩৯ হাজার ৭শ’৫২ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। আবাদ হওয়া জমি থেকে প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
এর মধ্যে যশোর জেলায় পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ১হাজার ৭শ’৭ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১হাজার ৫শ’৫০ হেক্টর জমিতে। ঝিনাইদহ জেলায় পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ১০ হাজার ৮৪ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে। মাগুরা জেলায় পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ১১ হাজার ৩৯ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০হাজার ২শ’৭৫ হেক্টর জমিতে। কুষ্টিয়া জেলায় পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ১২ হাজার ২শ’৫৫ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে। চুয়াডাঙ্গা জেলায় পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ১ হাজার ১শ’৩১ হেক্টর জমিতে।এ জেলায় পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৩শ’৭৫ হেক্টর জমিতে। মেহেরপুর জেলায় পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৫শ’৩৬ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৯শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে। গত বছর থেকে পেঁয়াজের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা পেঁয়াজ চাষে ঝুকেছেন বলে জানিয়েছেন মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা।
যশোরের চৌগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুশাব্বির হোসাইন বাসসকে বলেন, এ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে পেঁয়াজের আবাদ ভালো হয়েছে। পেঁয়াজ চাষে প্রণোদনা পেয়ে চাষীরা আগ্রহ সহকারে তাদের জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছেন।এ উপজেলার মাটি পেঁয়াজ চাষের জন্য উপযুক্ত।
স্বরুপদাহ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের পেঁয়াজ চাষী আব্দুর রশিদ জানান, তিনি ২৫ শতক জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। তিনি ৩৭-৩৮ মণ পেঁয়াজ পাবেন বলে আশাবাদী। মাশিলা গ্রামের পেঁয়াজ চাষী আহার আলী জানান, তিনি ২০শতক জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছেন। ভালো ফলন হয়েছে। অন্যবারের তুলনায় এবার পেঁয়াজের দাম বেশি থাকায় লাভবান হচ্ছেন। আগামিতে আরো বেশি জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করবেন বলেও জানান তিনি। একই ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন পেঁয়াজ চাষী জানান, তারা গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন এ দুই মৌসুমেই পেঁয়াজের চাষ করে থাকেন।
স্বরুপদাহ ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ পলাশ মিয়া বাসসকে বলেন, এই ইউনিয়নসহ আশপাশের বিভিন্ন ইউনিয়নে চাষীরা পেঁয়াজ চাষে ঝুকছেন। পেঁয়াজ চাষ বাড়াতে চাষীদের নিয়ে উঠান বৈঠকসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। আগামিতেও চাষীদের সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত থাকবে।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার জানান, পেঁয়াজ চাষ বাড়াতে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। প্রন্তিক ও ক্ষুদ্র চাষীদের দেয়া হয়েছে কৃষি প্রণোদনা। এ অঞ্চলের কৃষকরা বাজারে পেঁয়াজের অধিক জোগান দিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছেন। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসা শুরু করায় দামও কমতে শুরু করেছে। পেঁয়াজের উৎপাদন সারা বছর অব্যাহত রাখতে অধিক ফলনশীল নতুন নতুন জাতের পেঁয়াজ চাষে চাষীদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :